IQNA

খাসোগি হত্যাকাণ্ড: সৌদির ব্যবসা-বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগে বড় ধসের শঙ্কা

17:00 - November 06, 2018
সংবাদ: 2607135
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপের সবচেয়ে বড় ব্যাংক HSBC’র প্রধান কর্মকর্তা জন ফ্লিন্ট বলেছেন, সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের ফলে সৌদি আরবের ব্যবসা বাণিজ্য এবং বিদেশি বিনিয়োগ খাতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

বার্তা সংস্থা ইকনা: ফ্লিন্ট বলেন, ‘আমি খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি নিয়ে বিশ্ববাসীর আবেগ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন কিন্তু এর মাধ্যমে বিশ্ব শক্তির বাজারে সৌদি আরবকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া অতোটা সহজ কাজ হবে না।’

গত সপ্তাহে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া বিনিয়োগ সভায় যোগদানে বিরত থাকা বিশ্বের বড় বড় ব্যাংকগুলোর প্রধানদের মধ্যে ফ্লিন্ট অন্যতম। ফ্লিন্ট ছাড়াও ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের কর্মকর্তা তিদাজেন তাহিয়াম, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কর্মকর্তা বিল উইন্টার এবং জেপি মোরগান এন্ড চেজ এর কর্মকর্তা জেমি ডিমন সৌদির ওই বিনিয়োগ সভা বর্জন করেছিলেন।

তবে HSBC ব্যাংকের বৈশ্বিক বাজারজাতকারী বিভাগের প্রধান সামির আসাফ সৌদির বিনিয়োগ সভায় যোগদান করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

ফ্লিন্ট বলেন, ‘সৌদি আরবের বিনিয়োগ সভায় যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নেয়া একটি কঠিন ব্যাপার ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়াকে আমি সঠিক কাজ বলে অনুভব করেছিলাম।’

তবে ব্যাংকটির বৈশ্বিক বাজারজাতকারী বিভাগের প্রধান সামির আসাফকে সৌদির বিনিয়োগ সভায় পাঠিয়ে সৌদি আরবে ব্যাংকটির ৪,০০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দেশটির ভোক্তাদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করা হয়েছে বলে ফ্লিন্ট জানান।

এদিকে সাংবাদিক খাসোগি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ স্বরূপ সৌদি আরবের ওই বিনিয়োগ সভাকে বেশিরভাগ পশ্চিমা ব্যবসায়ী বয়কট করেছিলেন বলে জানা যায়। তবে এতকিছু সত্ত্বেও বিনিয়োগ সভাটি ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়।

প্রসঙ্গত, সৌদি সাংবাদিক খাসোগি ওয়াশিংটন পোস্টের নিয়মিত কলাম লেখক এবং সৌদি সরকারের বর্তমান পদক্ষেপসমূহের কট্টর সমালোচক ছিলেন। চলতি মাসের ২ তারিখে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি সরকার খাসোগিকে হত্যার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নেয়।

ফ্লিন্ট HSBC ব্যাংকের একটি উল্লেখযোগ্য লভ্যাংশ তুলতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিশেষত এশিয়া এবং ইউরোপে ব্যাংকটি শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের রিটেইল ব্যাংকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার সাথে HSBC ব্যাংক জড়িত হয়ে সবচেয়ে লাভবান হয়েছে বলে ব্যাংকটির কর্তা ব্যক্তিদের থেকে জানা যায়।

ফ্লিন্ট এর পূর্বে HSBC ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকটির সাবেক CEO স্টুয়ার্ট গালিভারের স্থলাভিষিক্ত হন।

দ্যা শেয়ার সেন্টার নামক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক হেলাল মিয়া বলেন, ‘HSBC ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিষদ ব্যাংকটির বার্ষিক মুনাফা বাড়ানোর জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তাদের এসকল উদ্যোগ অত্যন্ত ইতিবাচক।’

তিনি আরো বলেন, ‘এশিয়ায় সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং ইনস্যুরেন্স ব্যবসা বাড়ানোর মাধ্যমে HSBC বর্তমানে মুনাফা বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুখবর হচ্ছে দেরিতে হলেও ব্যাংকটি একই সাথে খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এ সিদ্ধান্তটি কৌশলগত ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ সূত্রঃ দ্যা গার্ডিয়ান।

captcha